খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের পূর্ণ চন্দ্র কার্বারী পাড়ায় ইউপিডিএফ’র প্রসীত গ্রুপের গোপন আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়ে প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম, গুলি, মোবাইল, ল্যাপটপ ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ভোর ৫টার দিকে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর সন্ধানে পরিচালিত এই অভিযানে এই বিপুল আলামত উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
সূত্র জানায়,
যৌথ বাহিনীর অভিযানব্যবহৃত ঘরটি তালাবদ্ধ ছিল, যা সেনাবাহিনীর সন্দেহ জাগায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় সামরিক ইউনিফর্ম, চাঁদার রশিদ, প্রশিক্ষণের বিভিন্ন উপকরণ এবং প্রযুক্তি সামগ্রী। এসব সরঞ্জাম ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সাংগঠনিক কার্যক্রমে ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অভিযান শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান। তিনি অভিযান সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপের নির্দেশ দেন। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে প্রতিটি এলাকা তল্লাশি করা হবে এবং এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, বৈসাবি উৎসব শেষে ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম ফেরার পথে পাঁচ শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপকে দায়ী করে সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপন ত্রিপুরা। তবে অংগ্য মারমা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ জেলা সংগঠন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই অভিযানে উদ্ধার হওয়া তথ্য ও আলামতের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের অন্যান্য আস্তানাও শনাক্ত করে অভিযান চালানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। খাগড়াছড়ি অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় এমন অভিযানকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন স্থানীয় প্রশাসন।
অপহৃত শিক্ষার্থীদের পরিবারের দাবি, দ্রুত তাদের সন্তানদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এলাকাবাসীও এ ধরনের অপরাধ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ চায়।