মুহাম্মদ হাবিব (চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিনিধি):ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায়
তীব্র গরমে যখন সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা তখনই পানি সংকটে পড়েছেন চরফ্যাশনের এলাকাবাসী।গ্রীষ্মের পূর্বেই কমতে শুরু করেছে এখানকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। নলকূপ থেকে পানি উঠছে না।গৃহস্থালি ও মাঠে কৃষক উভয়ই সংকটে পড়ছে।দূর-দূরান্ত থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে দৈনন্দিন ব্যবহৃত ও সুপেয় পানি। চরফ্যাশন পৌরসভাসহ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে এ পানি সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।সরজমিনে উপজেলার জিন্নাগড়,চরমাদ্রাজ,চরমানিকা,নজরুলনগর,আছলামপুর মজিবনগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে এসব এলাকার বাসাবাড়ির টিউবওয়েল,পাম্পে পানি উঠছে না।পানি শূন্যতায় অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে এ সব নলকূপ ও পাম্প।ফলে এসব এলাকার বাসিন্দাদের পানি সংগ্রহ করতে হয় দূর-দূরান্তের পানির উৎস থেকে।
পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু বলেন,প্রকৃতি পুকুর ভরাটের প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে! চরফ্যাসন পৌর এলাকায় গত ২৫ বছরে প্রায় শতাধিকেরও বেশি জলাশয় পুকুর হত্যা করা হয়েছে।
পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের,ফারুক মিয়া জানান,তার বাসায় বিদ্যুৎ মর্টার দিয়ে গভীর নলকূপ থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও পানি ওঠানো যাচ্ছেনা।ফলে তার ফ্লাইটের ভাড়াটিয়াদের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে।জিন্নাগড় দাসকান্ধী স্কিম ম্যানেজার স্যালোইঞ্জিন চালিয়ে ধানের সেচ কাজ করেন।দুই সপ্তাহ আগেও তাঁর সেচ পাম্পে পর্যাপ্ত পানি উঠত।এখন ৪ থেকে ৫ ফুট মাটির গভীরে মেশিন বসিয়েও পানি উঠছে না।ভারি বৃষ্টি না হলে চরফ্যাশনের হাজারো কৃষক জমিতে সেচ নিয়ে বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।ভূক্তভোগীরা বলছেন,ইরি ধানের সেচ কাজে এবং পুকুর খনন করে মাছ চাষের জন্যে মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।চরফ্যাশন উপজেলার বেশির ভাগ বিল-ঝিল,জলাশয় ও পুকুর-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে।বিশেষ করে উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত খালগুলিতে প্রায় ৮০ শতাংশ পানি শুকিয়ে গেছে।এসব খালের পানি দিয়েই এখানকার কৃষকেরা ধানচাষ করতো।জানা যায়,উপজেলায় সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ফুট নিচে পানির স্তর পাওয়া যায়। কিন্তু এখন ৩০ থেকে ৪০ ফুট নিচেও পানির লেয়ার মিলছে না।চরফ্যাশন কৃষি অফিস বলছে,এবারের ইরির মৌসমে উপজেলায় ৩২হাজার ৬ শত ৭০ হেক্টর জমিতে ইরি চাষ হয়েছে।এই চাষের জন্য১৮২৫টি স্যালোইঞ্জিন,১১টি গভীর নলকুপ,৪১টি বিদুৎ মটার দিয়ে পানি তোলা হচ্ছে।
স্থানীয় পৌর বাজারের ইলেকট্রিশিয়ান মামুন বলেন,বর্তমান প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন জানাচ্ছেন তার টিউবওয়েলর মোটরে পানি উঠছে না।কিন্তু এর কোন সমাধান দিতে পারছি না।বৃষ্টি হলে সমস্যা স্বাভাবিক হবে বলে তিনি মনে করেন।চরফ্যাশন জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলী বলেন,উপজেলা জুড়ে কত হাজার বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে নলকূপ রয়েছে,তা আমাদের পরিসংখ্যানে নেই। তবে অনুমতি না নিয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার গভীর ও অগভীর নলকূপ বসানো হয়েছে এর সংখ্যা ১০ হাজারের কম হবেনা।এসব নলকূপ থেকে নিয়ম না মেনে পানি উত্তোলন করায় স্তর নেমে যাচ্ছে। সরকারিভাবে উপজেলায় ৮ হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপে মধ্যে ২২০টি বর্তমানে অকেজো রয়েছে।তিনি জানান,লোক সংখ্যা অনুযায়ি এই উপজেলায় আরো ১০ হাজার নলকূপ স্থাপন প্রয়োজন।এবং প্রকৌশলীদের পরামর্শ নিয়ে নলকূপ স্থাপন করলে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
যোগাযোগ
বার্তা বিভাগঃ 01788-729304, 01883-306048
ই-মেইল: shadhinsurjodoy@gmail.com
কার্যালয়: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | স্বাধীন সূর্যোদয় | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।