প্রিয়তমার মনে অন্য প্রিয়জন
মোঃ মিলন হক। কথাসাহিত্যিক
সাগর বাংলায় অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করে।তার বাবা একজন দিনমজুর। প্রতিনিয়ত কাজ পাই না। `` কাজের চেয়ে মানুষ বেশি।
কাজ সীমাবদ্ধ কিন্তু মানুষের চাহিদা
অফুরন্ত!``
একদিন বাড়ি থেকে মেস আসার সময়। বাসে একজন মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। কথা বলা প্রসঙ্গে সাগর জানতে পারে, মেয়েটি তার কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্যাম ব্যাচের।মেয়েটির নাম `আশালতা`।সবাই `আশা` বলে।দেখতে বেশ সুন্দরী।
``আশা হেমন্তের প্রবাহমান স্রোতস্বিনীর মতোই শান্ত।দেহের গঠন ফর্সা,পাতলা,লম্বা বিধাতার দেওয়া এক অপরূপ রূপ বরে তৈরি ।``
একদিন ক্লাস শেষে সাগরের ক্যাম্পাসে দেখা হয় আশার সঙ্গে।অনেকক্ষণ বাদাম খেতে খেতে গল্পগুজব করে। সাগরকে ফেসবুক আইডি দেয় আশা। এরপর দুজনে প্রায় প্রতিনিয়ত কথা বলে। ক্যাম্পাসে দেখা করে।
সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে আড্ডা দেয় দুজনে। রাতে আশার মেসের সামনে রেখে আসে। আশার মেস অনেক টা ভিতরে, ঐ রাস্তায় অনেক মেয়ে মেস।রাতে ছেলে মানুষ যেন না যেতে পারে, সেজন্য রাস্তায় সিকিউরিটি গার্ড রয়েছে। প্রতিরাতে সিকিউরিটি গার্ড গুলো সাগর কে নিষেধ করে।
সাগর আশা কে বলে,
``তুমি যখন চলে যাও,আকাশের তারা ভরা জ্যোৎস্নাও আমার মনে প্রতিক্রিয়া করতে পারে না। তোমার চলে যাওয়ায়,আমার পৃথিবী আঁধারে ছেয়ে যায়।``
সাগর আশার প্রেমে পড়ে যায় কিন্তু আশা,সাগর কে একজন ভালো বন্ধু মনে করে।
উইলিয়াম শেক্সপিয়ার বলেছিলেন,`` একজন ছেলে কখনো একজন মেয়ের বন্ধু হতে পারে না,
কারণ এখানে আবেগ আছে, দৈহিক আকাঙ্ক্ষা আছে।``
আশা একজন ছেলে কে ভালোবাসে।সে ঢাকায় কোম্পানির চাকরী করে। আশার ঐ ছেলের সঙ্গে
কলেজে থাকা অবস্থাতেই সম্পর্ক হয়।
ঐ ছেলের বিষয়ে আশা সাগর কে কিছু বলে নি।
সাগর একদিন বিকেলে ক্যাম্পাসের বটগাছের নিচে বসে আছে আশার সঙ্গে। সাগর ভালোবাসার কথা আপ্রাণ চেষ্টা করে বলতে,যত বার বলার চেষ্টা করেছে ততবার তার ওষ্ঠধর ঝঙ্কারের দোলা দিয়ে ওঠে। অনেক ক্ষণ চেষ্টা করতে করতে কোন মতে` আমি তোমাকে ভালোবাসি` পর্যন্ত বলেছে।
``একজন ছেলে মানুষ যদি তার খুব পরিচিত মেয়ে মানুষের সঙ্গে ,কথা বলার সময় নার্ভাস বোধ করে।সে ছেলে আর যায় করুক, ঐ মেয়ে কে না ভালোবাসে পারে না।``
এ যেন আশার কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাত!
সাগরের কথা শুনে আশা পুরোয় আশ্চর্য হয়ে যায়।আশা খুব দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে যায়। সরাসরি না বলতে পারে না। আবার হ্যাঁ ও বলতে পারে না।কারণ তার বয়ফ্রেন্ড আছে।
আশা সাগর কে তার সম্পর্কের কথা বলে, কিন্তু সাগর কোন মতেই বিশ্বাস করে না আশার অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। সাগর আশা কে বলে, তোমার কারও সঙ্গে রিলেশন নেই। এই নিয়ে দুজনের ভীষণ তর্ক হয়। আশা অভিমান করে সাগরকে মেসেজ দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
তিন দিন কোন কথা হয় না। সাগর আশার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে। সাগর আশা কে মেসেজ দিয়ে বলে,
``তুমি সূর্য নও,
যে তোমার তেজ আছে!
তেজ আছে পুরুষ মানুষের।
তুমি ঐ গগনে নিশার শশী
তোমার রয়েছে অপরূপ চন্দ্রিকা।
যা আকৃষ্ট করে,অভিমানে
শর্বরীর বসুমতীকে তুমি
করতে পারো না তিমির!
তোমার কুমুদীর দীপ্তিতে ভরে
উঠুক এ দেহে প্রাণ আমার!``
উত্তরে আশা বলে, ``বসুমতী কে আমি করতে চাই নি আঁধার। বিষণ্ণতায় ঢেকে দিয়েছে মনের জোয়ার।``
আশা বলে তুমি আমাকে যতটা ভালোবাসো আমিও তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু আমি অপারগ! তোমার সঙ্গে প্রেমের বন্ধনে জড়াতে।
তোমাকে সুখ দিতে গিয়ে, একজন কে ভুলে যেতে কোনভাবেই পারবো না। আমাকে ক্ষমা করে দাও। তোমার কষ্ট হবে ছেড়ে দিতে কিন্তু আমি তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না।
``প্রেম মানে দুটি ভিন্ন মনের একটি অটুট
বিশ্বাস।``
সাগর বলে, ``কখনো কাউকে প্রপোজ করি নি।
এজন্য প্রেমিক পুরুষের মতো ভাষা জানি না!এটুকু জানি তোমাকে ভালোবাসি।``
তোমার প্রতি ভালোবাসার জন্ম কিভাবে হলো কিছুই জানি না। শুধু এতটুকু জানি তোমার সঙ্গে কাটানো প্রতিটি সেকেন্ড আমার কাছে পৃথিবীর সব থেকে মূল্যবান।
``তোমাকে একবার দেখার জন্য কত কিছু করি।
যে দিন দেখা হয় হৃদয় মাঝে সকালের সূর্যের হাসি ঝলমল করে। না দেখতে পেলে বিভীষিকায় বিষণ্ণ হয়। ``
সাগর বলে,``বিশ্বাস করেছ ভালোবাসি । আমাদের প্রেম হোক বা না হোক, বিশ্বাস করাতে পেরেছি বলে নিজেকে ধন্য মনে করি। ``
অনেক বিরক্ত করেছি, আর চাই না বিরক্ত করতে। ব্লক করে দাও কখনো ভালোবাসি বলে বিরক্ত করবো না। আমার তোমাকে ব্লক দেওয়া ভীষণ পীড়া দায়ক। তুমি ব্লক দিলে, কখনো বিরক্ত করার সুযোগ পাবো না।
হয়তো ক্লাস শেষে দেখা হতে পারে,ক্যাম্পাসে
কথা নাও হতে পারে।
ভালো থেকো
সুস্থ থাকো।
I lose you from my heart for ever and again says that I love you.
এরপর সাগর ভগ্ন হৃদয় নিয়ে। সারারাত বিছানায় শুয়ে কান্না করে।হাজারো মনোবেদনায়
ব্যথিত হয়ে নিদ্রায় পড়ে।
এরপর বেশ কিছুদিন যায়।আশা কে ভুলে যাওয়ার অনেক চেষ্টা করে।
আশার সঙ্গে ক্যাম্পাসে দেখা হয়। আশা কথা বলার অনেক চেষ্টা করে সাগরের সঙ্গে। সাগর ও কথা বলে আশার সঙ্গে কিন্তু সেই কথা গুলো নিছক দায়ে পড়ে বলে!
যোগাযোগ
বার্তা বিভাগঃ 01788-729304, 01883-306048
ই-মেইল: shadhinsurjodoy@gmail.com
কার্যালয়: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | স্বাধীন সূর্যোদয় | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।